Tuesday, March 24, 2009

আমি মিশু আর সমুদ্দুর কখনো ফিরে এলে অথবা নিলুর জন্য..

আমি মিশু আর সমুদ্দুর কখনো ফিরে এলে অথবা নিলুর জন্য..
আব্দুল ওয়াহেদ

সমুদ্র কি তোমারি মতো!! তোমার দিকে আরেকবার ফিরে তাকালাম, দেখলাম দৃশ্য সীমানার ভেসে আছে আকাশের ছায়া। আকাশ ছায়া মেলে তাকিয়ে আছে। নিরবতায়। অনেক কথাই বলে গেলে। সে যেন অনন্ত গল্প গাঁথা, যা বলতে হয় সুনসান নিরবতায়। মিশু তোমায় সে গল্পটা শুনিয়ে ছিলাম কোন এক চৈত্রের রাত্রিরে। বিশাল মাঠটা পেরুলে যেখান স্থির জলের লেক। মাথার উপর পরিপূর্ণ চাঁদ। জলের সুক্ষ ঢেউয়ে চাঁদ আরো বড় দেখায়। হয়তো আমি বলে ছিলাম দুঃখ ভারাক্রান্ত মনে।

নিলু এসেছিলো চৈত্রের বাতাস হয়ে। লেকের টলটলে শীতল জল ছুঁয়ে। আমাদের ছেলে মানুষী কথা শুনে কাঁচ ভাঙ্গা ঝনঝন শব্দ...। হাসির কি বললাম!! সেতো তোমারি গল্প। মিশুকে জিজ্ঞেস করতে পারো, সে আমার মতো মিথ্যেবাদী নয়। মিথ্যেবাদী এই নামটি তোমারি দেয়া। তোমার সবকথায় আমার কাছে জলের মতো স্বচ্ছ। তুমি যাই বলো তা আমার মাঝে জলের মতো গড়িয়ে গড়িয়ে সমুদ্দুরে মেশে। হয়তো তোমাকে আমি সমুদ্দুর বলে ডাকি তাই।

তুমি আনমনে সারাটা দুপুর জানালার সামনে দাড়িয়ে কাটিয়ে দাও। মেঘের দল তোমাকে জড়িয়ে ধরে। তারপরও তোমার বিষস্নতা পরাজিত হয়না, তোমায় যেন আরো শক্তভাবে জড়িয়ে ধরে। যদি আমি মেঘ হতাম তোমার অজ্ঞাতে মেঘ হয়ে সারাটা বেলা..। আহা! নিলু আমাদের সমুদ্দুর দিনগুলো। স্মৃতি তোমায় পরাজিত কেন করে? তুমি আর আকাশের দিকে কোন কিছু খুঁজো না। আকাশ শুধু শূন্যতার হদিশ দেয়। ওখানে তোমার জন্যে কেউ অপেক্ষা করে নেই।

আমি একা একা লেকের পাড়ে। ছায়াময় টলটলে কালো জল। আমি ছুঁতে গেলে দূরে সরে যায়। হয়তো সবকিছু আগের মতো, আমিই দূরে সরে পড়ি। জৈষ্ঠ্যের কড়া রোদে একাএকা হাঁটি। আমার ছায়া পড়ে না। মাঝে মাঝে ইচ্ছে হয় কাঁদি। কিন্তু কোথায় সে চোখের জল, আমার তো কোন ইচ্ছে নেই, হতাশা নেই, আনন্দ নেই। শুধু মাঝে মাঝে দূরতম মরীচিকার মতো কি যেন আমায় তাড়া করে। আমরা ক'জনা..

শেষ বিকেলে মিশুর ঘুম ভাঙ্গে। মরা মরা আলোয় সবকিছু কেমন যেন ফ্যাকাশে লাগে। কিছুক্ষন চুপচাপ শুয়ে থাকে। কি যেন মনে পড়ে পড়ে করে আর পড়ছে না। কিছুটা অস্বস্থি লাগে। হঠাৎ উঠে বসে, দুপুরে কিছু খাওয়া হয়নি। না, আর খেয়ে কাজ নেই। সে একা একা কিছুক্ষন হাঁটে।

তারপর মাঠের এক কোনে গিয়ে বসে। দূরের পাহাড় সারির দিকে তাকায়। ধীর পায়ে পাহাড় সারির দিকে এগুতে থাকে। বেশী দূর এগুতে পারে না। সামনে দৃশ্যটা বদলে গিয়ে জল ভরা সরোবর হয়ে য্য়। মিশু এগিয়ে যায়, পা ভেজায়... তারপর আমি আর নিলু আসি হাত ধরাধরি করে। আমরাও পা ভেজাই।

জোসনার আলোয় চারদিক প্লাবিত...
আমরা জলে পা ডুবিয়ে চুপচাপ। কতকটা কাল কেটে গেলে এমন দিন আসে আমরা কেউ জানি না। এতটুকুই জানি কোন অপেক্ষাই চিরন্তন নয়।

No comments:

Post a Comment