Monday, April 6, 2009

হাসান মশহুদ এবং তাহারা..

হাসান মশহুদ এবং তাহারা..
আবদুল ওয়াহেদ

জনাব হাসান মশহুদ চৌধুরীকে নিয়ে নানা লেখা জোকা কথা বার্তা ইতিমধ্যে আত্নস্থ করিলাম। কারো মতে তিনি যুগের ত্রাণ কর্তা, কারো কাছে এর বিপরীত। বেশ তোড় জোড়ের সাথে যে যার মত রেখে যাচ্ছেন। এই মতগুলো ব্যতিক্রম কিছু নয়। কারণ আমরা এই ধরনের কথা বার্তা বলতে এবং শুনতে অভ্যস্ত। তাকে যেভাবে আলোচনায় আনা হোক না কেন এটা সত্য যে, তিনি হাওয়া থেকে উদয় হোন নি অথবা নবু্য়্যত প্রাপ্ত হয়েছেন। তিনি রাজনীতি নামক খেলার একটা ঘুটি ছাড়া কিছু নন। তিনি নিরপেক্ষতার নাম দিয়ে রাজনীতির করেছেন। তা আবার অরাজনৈতিক রাজনীতি। তিনি যে উদ্দেশ্যে আবির্ভূত হয়েছিলেন, সে মিশন সফল করতে সর্বার্থক চেষ্টা করেছিলেন। তার মুখোশ ছিলো ন্যায় পরায়ণতা, ন্যায্যতা বোধ ইত্যাদি। কিন্তু আদতে তা কি? নিরন্কুশ ক্ষমতার স্বেচ্ছাচারীতা এবং সে ক্ষমতা আবার নানা শক্তির শর্তের জালে বেঁধে দেয়া। রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে ন্যায্যতা জারী হয় আইন সম্মতভাবে। আবার এমন নয় যে, যেকোন আইন নৈতিক ভাবে তৈরী হয়। আমরা দেখেছি, কিভাবে মাসের পর মাস শুধুমাত্র সন্দেহের বশীভুত হয়ে জেল খেটেছেন আমাদের রাজনীতিবিদরা। এই ধরনের আইন তৈরীতে আমরা নিশ্চয় রেকর্ড করে ফেলেছি। আমরা জানি সে হাসিনা হোক খালেদা হোক বিচারের উর্ধে নন। কিন্তু কি হলো শেষ পয্যন্ত তারা সন্দেহ মুক্ত হলেন। আবার, প্রথম আলোর মালিক সহ বিভিন্ন জনের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও হাসান মশহুদ'রা দেখেও দেখলেন না। অথবা তিনি নিজেও নিয়ম না মেনে বাড়ি করার কারনে জরিমানা দিয়ে ছাড়া পেয়েছিলেন।
আমরা বুঝি আমাদের রাজনীতি'রা খারাপ, কিন্তু আমি মনে করি যারা নীতি বার্গিশতার দোহাই দিয়ে রাজনীতির বেহাল দশায় বগল বাজিয়ে ছিলেন , কারনে অকারনে এখনো বাজান তারা আরো খারাপ।

তারা রাজনীতিকে না বলতে বলতে আমাদের এমন জায়গায় নিয়ে যান, যেখানে আমাদের সকল ভাল-মন্দ জ্ঞান বেকুবীতে পরিণত হয়। আমরা গা বাঁচানোর সততার কথা বলি। যেগুলোতে সততার লেশ মাত্র নাই। আছে কথার ফুলঝুরি আর বাগাম্বরতা। আমাদের সামগ্রিক স্বার্থে আমরা এইটুকু বলতে পারি জাতি মুক্তির যে সংকট রাজনীতি ছাড়া তার থেকে উত্তরণ সম্ভব নয়। যারা দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধের লড়াকু যোদ্ধা তারাই আমাদের সামিল করেছেন অনন্তের যুদ্ধে।

ইতিহাসের শিক্ষা হলো ইতিহাস থেকে কেউ শেখে না, তা নাহলে ইতিহাসে এতো উদাহরণ থাকা সত্ত্বেও মানুষ নিজের জাতির সাথে বিশ্বাসঘাতকতা কিভাবে করে।



ইচ্ছেরা তোর দেয় না ধরা

ইচ্ছেরা তোর দেয় না ধরা
আবদুল ওয়াহেদ

ম্যাক্সিম গোর্কির ত্রিপিঠক.. যেন আমিই হেটে চলি, আমার চোখে দেখি।
আহা!! এত করুণ, এত হ্তশ্রী জীবন, তারপরও এই জীবনই তো কখনো কখনো অসাধারণ চিত্রময়! সব মিলিয়ে তিনি গোর্কি হয়ে উঠেন। এটাই কি সে জীবন? নিজেকে প্রশ্ন করে ছিলাম।

কোনটাকে বলা যায় প্রকৃত জীবন, নাকি প্রকৃতই প্রকৃত বলে কিছু পাই না।
আমরা যা পাই তাই-ই সই। হুমম.. ভাবি এভাবে চলুক না! না চলে না। অন্তত চলছে না। আমার স্বপ্ন আছে, আশা আছে, আমি সদম্ভে নিজের অস্তিত্ব ঘোষনা করি। এই অস্তিত্বের সম্ভাবনা থেকে দেখলে, দেখতে হয় কে আমি? প্রজাতি অর্থে মানুষ। আর..

মানুষ কি? এটা নিয়ে বিস্তর তর্ক বিতর্ক আছে। আমি বলি তাকে দেখতে হবে এমন কিছু দিয়ে যা থেকে তার কিছু একটা হয়ে ওঠা টের পাওয়া যায়। তার অনন্য স্থান হলো, সে ইচ্ছে পোষণ করে। অসম্ভব ভেবেই করে, সে ইচ্ছে তার কাছে সত্য হয়ে আসে। আমার দেখা জানা বুঝা এরা আমারি, আমার মতো কি? কখন যে দ্বৈততায় ডুব মারে মন।
আমি আর কিইবা বলতে পারি! করতে পারি?
আবার ডুব মারি ইচ্ছের কাছে। অপরাজেয়। না ভুল হলো। জগতকে আমি দুইভাবে পাই। স্থান-কালে এবঙ আমার অনৈতিহাসিক পরিভ্রমনের স্থানে। কোথাও আমি অপরাজেয় না। কমপক্ষে আপন খেয়ালের কাছে। এ খেয়ালের ঘুড়ি কি আমিই ওড়াই?

স্থান-কালে জগত আমাকে কি দেখায়? না কি নিজে তাকে দেখি বলে সে আমার ইচ্ছেতে বন্দী? এমনতর প্রশ্ন। (সত্য বিষয়ে যখন ক্লাসে পড়েছিলাম দেখি সকল বুঝাপড়ায় বিশাল জ্যাম লেগে গেছে। আর আমাদের যে গুরু তিনি কখনো কোনো জ্যাম না ছুটিয়ে উপভোগ করে গেছেন।) যা হোক ইচ্ছে স্থান-কালে ছদ্মবেশে হাজির হয়। আমরা স্থানিক চাহিদাকে জাতি গোষ্টির বিবেচনা করি। প্রায়শঃ নিজের সন্তুষ্ট বোধের জায়গায়। আমরা যারা আম জনতা তারা ভাবি এই ইচ্ছে পূরণের মধ্য দিয়ে জগতের জন্য কিছু করা হলো। বিষয়টা এমন নয় যে, যা পেলাম তা-ই খেলাম বরঙ নিজের ইচ্ছেকে জগতের ঘাড়ে চাপিয়ে দিতে হবে। সহি ইচ্ছে (সহী ইচ্ছে না হলেও লোকে অনেক অন্যায় অবদার পূরণ করে নেয়। ইচ্ছে যদি নিজেই নিজের ক্ষমতা টের না পায়, তবে তার লাগাম পাবো কই। যাক ইচ্ছে নিজে কোন দেবতা গোছের কিছু না)। আমরা কে কতকটা বোধী অর্জন করলাম তা এর মধ্যে দিয়ে বুঝা যায়। যেহেতু স্থান-কালে আছি ধরে নিয়েও কাজটা হয়তো করা যায়।

অনৈতিহাসিক বলে যা আসে তাকে বুঝানোর ক্ষমতা আমার নাই। প্রশ্ন হলো তাহলে কেন এই উচ্চবাচ্য অথবা মানুষ হিসেবে আমি নিজেও স্থান-কালে আছি। একটা কথা বলা যায় শুধুমাত্র অনুভূতি। অনুভূতি তো প্রমান্য কিছু না। এতে ব্যাপক গোলমেলে বিষয় থাকে। আরেকটা বিষয় হতে পারে, আমরা মোটামুটি আমাদের সীমাবদ্ধতা নিয়ে সচেতন। এই সচেতনতাও বলতে পারে স্থানের সীমায়িত অঙ্গনে সবকিছুই সীমাবদ্ধ। আবার স্থানিক আমার পক্ষে স্থানের অতীত হওয়া কি সম্ভব? সম্ভব। যেহেতু চিন্তাকারে চিন্তাতীত স্থান-কালের কথা বলছি। যদিও প্যারাডক্স মনে হচ্ছে তারপরও বলি, একমাত্র ইচ্ছে আকারে। জোড়ালো ইচ্ছে। তারপরও ইচ্ছের বয়ান মহত্তর কিছু হলো না। যেহেতু একে সাধারনের কাতাঁরে ফেলা গেলো। আমার মতে সাধারন কিছু নাই। সবকিছুই আসাধারন। এই অসাধারনত্বের দেখা থেকে যদি নিজেকে নিজের ইচ্ছে দ্বারা ব্যাখ্যা করতে যাই, দেখা যায় এই আমি তো আমি না। আমি তো সেই যাকে না যায় চেনা, না যায় বুঝা। তখন সকল ইচ্ছে অনিচ্ছা অধরায় থেকে যায়।

কিন্তু সবটাই ভুল মনে হয়। মানুষের ইচ্ছেকে এভাবে বিভাজিত করে দেখা কি সম্ভব। আবার এর পুরোটা কারো পক্ষে কি দেখা সম্ভব? যদি মানব গোত্রীয় কেউ হয়, তবে সে হবে ইচ্ছেশূন্য!! অথবা আপনিই ভেবে নেন।