Saturday, May 23, 2009

সঙ্গী

সঙ্গী
আব্দুল ওয়াহেদ

নিরবতায় বসে থাকি। চোখ মুদে সুখ খুঁজে পাই। ভাঙ্গা আয়নাটা খুঁজি, নিজের চেহারাটা দেখতে ইচ্ছে করে। খুঁজে পাই না।

বাতাসের ফিসফিসানিতে জেগে উঠি। ধাতস্থ হতে সময় লাগে। সেকেন্ডের কাঁটা খসে যাওয়া রেডিয়াম ডায়ালের ঘড়িটা জানান দেয় রাত দুই পয়ঁত্রিশ মিনিট।

কুকুরটা আমার পাশে পাশে চলছে। কেন? জানি না। এমন গভীর রাতে একবার তাবলীগের একটা দলের সাথে দেখা হয়েছিলো। একজন বলেছিলো, এতরাতে একা চলবেন না। যদি চলতেই হয় হাত একটা লাটি অথবা ম্যাচ রাখবেন। হুম, আমি একা না।

আমি কুকুরটিকে বললাম, কিরে কি খবর?
ফিরে তাকালো যেন। তারপর চাদেঁর দিকে তাকিয়ে হাঁক ছাড়ল। কেন? কে জানে? প্রকৃতির সাথে কথপোকথনে হয়ত জীব জন্তু'র নিজস্ব ভাষা আছে। চাঁদেরও কি প্রতিউত্তর দেয়ার ক্ষমতা আছে? হয়ত আছে। মানুষেরও হয়ত কোন এককালে ছিলো, আজ তা হারিয়ে গেছে। আমি তো প্রকৃতির ভাষা জানি না। তবে কুকুর'টা আমার পাশাপাশি চলছে কেন? সে কি ভাবছে আমার মতো অবোধকে বিজন প্রকৃতি একা ছেড়ে দেয়া ঠিক না।

আকাঁ বাকাঁ পাহাড়ী পথ হওয়ায় চাদেঁর রহস্যময়তা সমতল প্রকৃতিতে যেমন ধরা পড়ে তেমন না, অন্যরকম কিছু। পাহাড়ী ঢালুতে থাকা গাছের ছায়ায় হাটছি। জোসনা ধরা যায় আবার যায না, লুকোচুরি খেলছে। হাত বাড়িয়ে জোসনা ধরলাম। নরম নরম একটা ভাব। কি বলছি! আলো ধরা যায় আবার নরমও হয়! আবার ধরতে গেলাম আর তখনি মেঘের আড়ালে চাঁদ হারিয়ে গেলো।

কুকুরটা যেন বিভ্রান্ত হয়ে হাঁক ছাড়ল।
বললাম, ব্যাটা চুপ যা! রাত এখনো অনেক বাকী।

বাতাসের ফিসফিসানি যেন বেড়ে চলে। ভয় পেয়ে উঠি।
এতোক্ষন পাশাপাশি থাকলেও কুকুর'টা এখন সামনে সামনে চলছে। পথ দেখিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। আগে ভেবেছিলাম আমার সঙ্গই তাকে টেনে এনেছিল, এখন দেখছি তার সঙ্গই আমাকে টেনে এনেছে।

No comments:

Post a Comment