Saturday, June 27, 2009

দো'টানা

দো'টানা
আব্দুল ওয়াহেদ


"হে প্রভু নিজেরে বুঝার ক্ষমতা দাও!"

এই নিজ আর আমি'র মধ্যে কি যেন এক পার্থক্য আছে। যতবার বলতে চাই আমি, কে যেন টুটি চেপে ধরে বলে, সীমা লঙ্ঘন করিস না। সীমা!! অদ্ভুত লাগে আমিত্বের সীমা লঙ্ঘন কি 'আমি' উচ্চারণের ভেতর দিয়ে ঘটে। এর জবাব পাই না। তাহলে নিজের ভেতর এমন দ্বন্ধের আভাস মেলে যারে আমি বুঝি না। শুধু এইটুকু বুঝলাম এর মীমাংসা চাই।

মীমাংসায় যাওয়ার আগে প্রশ্ন জাগল, কেন নিজেরে বুঝতে হবে?
যেহেতু সত্য জানতে চাই, তার যাত্রাবিন্দু থাকতে হবে। নাহলে হাভাতে ঘুরতে হবে। ধাধাঁর পর ধাধাঁয় পড়ার রিস্ক না নিয়ে কিছু উত্তর পাবার চেষ্টা করি।

নিজেকে দিয়ে শুরু করার জন্য কিছু পূর্বানুমান ছিলো, যেমন- এই জটিল জগতে কোন জিনিসটা বেশী চেনা-জানা ইত্যাদী।
কিন্তু যখন 'আমি কে?' চিরন্তন প্রশ্ন পরলাম ফাপরে। আসলে আমি কে? ডানে বায়ে তাকিয়ে দুই একটা কথা বলার চেষ্টা করলাম। যেমন- জৈবিক সত্ত্বা, বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন ইত্যাদি ইত্যাদি। ওমা !! নিজের উত্তরে নিজেরেই সামাল দিতে পারি না। যাই বলি সে হাসে। মোটা দাগে আমার ভেতর এমন কিছু আছে, যা আমি নিজেও ধরতে পারছি না। বুঝলাম সাধে কি সক্রেটিস বলেছেন, নিজেকে জানো। বেদ, কুর'আন আরো এগিয়ে বলে, যে নিজেকে জেনেছে, সে স্বীয় রবকে জেনেছে।

এইখানে এসে বুঝলাম প্রশ্নটা ঠিক আছে। যুগে যুগে মহামানব'রা ( কোন না কোনভাবে সকল মানুষ) নিজেকে বুঝার সংগ্রামটা করে গেছেন। এই প্রশ্নের হয়ে নিজের ভেতর নানান ভরকেন্দ্রের চাপ অনুভব শুরু করি। ভরকেন্দ্রের বর্ণনা পুরোপুরি দেয়ার ভাষা নাই, কারণ তারা একে অপরের সারাক্ষন কুস্তি খেলে। যে যখন জয়ী হয় আমি বলি তুমি সহী। যেমন যখন নিজের দেখা, বর্ণনা, ভাব, ভাষার কথা বলি বাহ! বাহ! তুমি ঠিক। কিন্তু পর সচেতন বলে এতো নিশ্চিত হচ্ছো কেমনে? তখন সবকিছুকে সাপেক্ষ হিসেবে ছাড় দিয়ে আমার নিজের বলে কিছুই থাকে না। এর ওর মধ্যে দিয়ে যেতে যেতে আপনাকেই হারিয়ে ফেলেছি। তখন দো'টানাই পড়ি।

আচ্ছা এই দো'টানাই কি আমি নিজে! হতে পারে। জগতে আর কেউ কি আছে যে মানুষের মতো দ্বৈত জীবন যাপনকারী !

1 comment: